সৌদি আরবে নামাজের সময়ও দোকান খোলা থাকবে

সৌদি আরবে বহু দশক ধরে এমন পদ্ধতি চালু ছিল যে নামাজের জন্য আজান শোনামাত্রই বাণিজ্যিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে ফেলত। নামাজের সময় সারি সারি গাড়িগুলোকে পেট্রোল পাম্পের সামনে অপেক্ষা করতে হতো তেল নেয়ার জন্য।

কারণ নামাজ শেষে পেট্রোল পাম্পের কার্যক্রম শুরু হবে। এছাড়া ফার্মেসি, রেস্টুরেন্ট ও সুপার মার্কেটগুলোর ক্রেতা ও বিক্রেতাদের অপেক্ষা করতে হতো নামাজ শেষ হওয়ার জন্য।

কিন্তু সে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে। শুক্রবার সৌদি চেম্বারের জারি করা এক সার্কুলারে জানা যায়, সৌদি কর্তৃপক্ষ নামাজের সময়ও দোকান খোলা রাখার অনুমতি দিচ্ছে।

সৌদি চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রধান আজনাল বিন আব্দুল আজিজ আল-আজলান এক বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটির সদস্যদের জানান, নামাজের সময়ও দোকান খোলা রাখার বিষয়টি ক্রেতাদের সাথে দোকানদারদের সেবাধর্মী সম্পর্কোন্নয়নের একটি উদ্যোগ।

সৌদির এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে মধ্যপ্রাচ্যেরে রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ক লেখক ও সমালোচক আলি সমির শিহাবি বলেন, নামাজের সময়ও সৌদি আরবে দোকান খোলা রাখার বিষয়টি প্রাত্যহিক জীবনে ধর্মীয় নেতাদের প্রভাব অবসানে একটি প্রতীকী ও বাস্তবিক পদক্ষেপ।

আলি সমির শিহাবি বলেন, নামাজের জন্য দোকান বা বাণিজ্যিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখা এমন এক অজুহাত যার মাধ্যমে পণ্য ও সেবার জন্য ক্রেতাদের দীর্ঘ সময়ের জন্য অপেক্ষায় রাখা হয়। নামাজের জন্য বন্ধ রাখার বিষয়টি সৌদি আরবের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মচারীদের অদক্ষতার প্রধান কারণ।

অপরদিকে আরেক অর্থনীতিবিদ হাবিবুল্লাহ আল-তুর্কিস্তানি আরব নিউজকে বলেন, নামাজের সময়ও সৌদি আরবে দোকান খোলা রাখার বিষয়টিতে কোনো অর্থনৈতিক লাভ নেই। কারণ, শ্রমিকদের দিনের মধ্যবর্তী সময়ে (দুপরের খাবারের জন্য) এমনিতেই ছুটি দিতে হয়।

এমনকি নামাজের সময় সৌদি আরবে দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্তের পরও শ্রমিকদের (নামাজে যেতে) ছুটি দিতে হবে আর অন্যান্য কারণেও ছুটি দিতে হবে। এ বিষয়গুলো শ্রমিকদের অধিকারের সাথে সম্পর্কিত।

নামাজের সময় দোকান খোলা রাখার বিষয়টি নিয়ে সৌদি আরবে বহুদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। এর আগে নামাজের সময় দোকান খোলা রাখলে শাস্তি হিসেবে করাদণ্ড বা অন্য কোনো শাস্তি দিতে পারত সৌদি আরবের ধর্মীয় পুলিশ।

সূত্র : আরব নিউজ